বাংলাদেশের সেরা ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও পরিচিতি নিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের আর্টিকেল। যারা দেশের এই সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে আগে থেকে জানা-শোনা অবশ্যই দরকার। আর সে জন্যই আজকে আমরা আপনাদের জানাবো শিক্ষা, গবেষণা ও মান উন্নয়নে দেশের সেরা ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে।
একটি দেশের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে এবং অর্থনৈতিক ও নীতিগত মান উন্নয়নে জনগনের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা আবশ্যক। এর জন্য দেশের সরকার সরকারি অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে উচ্চশিক্
ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। আর এই সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই বলা হয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে এরূপ ৪৮ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী সরকারি অর্থায়নে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। তবে গবেষণা ও শিক্ষার গুণগত মানের দিক থেকে খুব কম বিশ্ববিদ্যালয়ই সেরার তালিকায় আসতে পেরেছে। তাহলে চলুন জেনে নেই দেশের শীর্ষ ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে।
Table of Contents
বাংলাদেশ প্রোকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রোকৌশল ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো Bangladesh University of Engineering and Technology (BUET). বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় ১৯৬২ সালে।
প্রায় ৮৩.৯ একর জমির ওপর স্থাপিত এই বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা শহরের লালবাগ থানার পলাশী এলাকায় অবস্থিত। বর্তমানে বুয়েটে ৫ টি অনুষদের অধীনে ১৮ টি বিভাগ রয়েছে। বুয়েটে বর্তমানে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০, ০০০ এর উর্ধ্বে এবং মোট আবাসিক হলের সংখ্যা ৮ টি।
একনজরে বুয়েট:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৬২
- শিক্ষার ধরণ: প্রোকৌশল
- বর্তমান উপাচার্য: সত্য প্রসাদ মজুমদার
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মন্ঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: বুয়েট
- ওয়েবসাইট: https://www.buet.ac.bd/
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত দেশের অন্যতম সেরা এবং প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের তত্ত্বাবধানে ঢাকার শাহবাগে প্রায় ৬০০ একর জমির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান। কঠোর মান নিয়ন্ত্রণের কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে বিশেষভাবে পরিচিত। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৩ টি অনুষদের অধীনে ৮৩ টি বিভাগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ১৩ টি ইন্সটিটিউট এবং ৫৬ টি গবেষণা ব্যুরো ও কেন্দ্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৪৬, ১৫০ জন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এসব শিক্ষার্থীর থাকার জন্য রয়েছে মোট ২০ টি আবাসিক হল ও ৩ টি ছাত্রাবাস। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হলো বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার।
একনজরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯২১ সাল
- ধরণ: সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
- বর্তমান উপাচার্য: মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: ঢাবি
- ওয়েবসাইট: https://www.du.ac.bd/
খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)
বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে কুয়েট)। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা খুলনায় ১১৭.৩৫ একর জমির ওপর নির্মিত একটি সরকারি প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
কুয়েট ১৯৬৭ সালে খুলনা প্রোকৌশল কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং পরবর্তীতে ২০০৩ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬,০০০ এর অধিক শিক্ষার্থী এবং ৫৫৭ জনের অধিক শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া এতে ৩ টি অনুষদের অধীনে মোট ২০ টি বিভাগ রয়েছে। যার মধ্যে ১৬ টি বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি হলো বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ডিজিটাল স্বয়ংক্রিয় গ্রন্থাগার। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান মোট আবাসিক হলের সংখ্যা ৭ টি। ১ টি মহিলা শিক্ষার্থী ও ৬ টি পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত।
একনজরে কুয়েট:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৬৭
- ধরন: সরকারি প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
- বর্তমান উপাচার্য: অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: কুয়েট
- ওয়েবসাইট: http://kuet.ac.bd/
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবথেকে সেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত এবং দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ৬৯৭.৫৬ একর জমির ওপর নির্মিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকার অদূরে সাভার এলাকায় ১৯৭০ সালে স্থাপিত হয়। তবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ১৯৭২ সালে।
২০১৪ সালের হিসেবে দেশের অন্যতম সেরা এই বিদ্যাপীঠের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১৬, ৭৮১ জন এবং শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গের সংখ্যা ৭৫৫ জন। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ টি অনুষদের অধীনে মোট ৩৫ টি বিভাগ ও ৪ টি ইন্সটিটিউট রয়েছে।
বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের সংখ্যা ১৬ টি। যার মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৮ টি এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৮ টি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হল। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনারটি অবস্থিত।
একনজরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৭০
- ধরন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
- বর্তমান উপাচার্য: নূরুল আলম
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: জাবি
- ওয়েবসাইট: https://www.juniv.edu/
চট্টগ্রাম প্রোকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)
চট্টগ্রাম প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের আরেকটি শীর্ষস্থানীয় সরকারি প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বিদ্যালয়টি চট্টগ্রাম জেলা শহরের অদূরে রাউজান থানায় অবস্থিত।
বিশ্ববিদ্যালয়টি সর্বপ্রথম ১৯৬৮ সালে প্রোকৌশল কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৫০০ জন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা দানের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত ভাষা হলো ইংরেজি। চট্টগ্রাম প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা চুয়েটে বর্তমানে মোট ৫ টি অনুষদের অধীনে ১৩ টি বিভাগ রয়েছে।
১৬৯ একর জায়গা নিয়ে নির্মিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন অনুষদের জন্য আলাদা আলাদা একাডেমিক ভবন, গবেষণাগার, লাইব্রেরি ভবন, আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, মসজিদ, ক্যান্টিন ও মেডিকেল সেন্টার সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রয়েছে সুবিশাল মাঠ এবং ৫টি ছাত্র হল এবং ২টি ছাত্রী হল। এমনকি পরিবহনের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে নিজস্ব মোট ১৪ টি বাস।
একনজরে চুয়েট:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৬৮
- ধরন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রোকৌশল
- বর্তমান উপাচার্য: মোহাম্মদ রফিকুল আলম
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: চুয়েট
- ওয়েবসাইট: http://www.cuet.ac.bd/
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত দেশের একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ ও ডিজিটাল ক্যাম্পাস বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়। ৭৫৩ একর জমির ওপর নির্মিত এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ সরকারি বিদ্যাপীঠ।
প্রাচ্যের ক্যাম্ব্রিজ খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল ৬ জুলাই ১৯৫৩ সাল। ২০১৯ সালের হিসেবে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৮ হাজারেরও অধিক এবং শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গের সংখ্যা ১৭৫৮ জন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট ১১ টি অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৯ টি এবং অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে মোট ৪১ টি। এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য মোট ১৭ টি হল রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য রয়েছে ১১ টি এবং ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৬ টি হল।
একনজরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়:
প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৫৩
ধরন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমান উপাচার্য: অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু
অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
সংক্ষিপ্ত নাম: রাবি
ওয়েবসাইট: http://www.ru.ac.bd/
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের তৃতীয় এবং আয়তনের দিক থেকে সর্ববৃহৎ গবেষণাধর্মী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় স্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষাঙ্গনের মোট আয়তন ২, ১০০ একর।
২০১৯ সালের হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২৭, ৫০০ জন এবং শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন ৮৭২ জন।
সৌন্দর্যের দিক থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি হলো সমগ্র চট্টগ্রাম শহরের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার।
একনজরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৬৬
- ধরন: সহ-শিক্ষা
- বর্তমান উপাচার্য: শিরীণ আখতার
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: চবি
- ওয়েবসাইট: https://www.cu.ac.bd/
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রথম এবং এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি সিলেটের কুমারগাও অঞ্চলে ৩২০ একর জমির ওপর নির্মিত।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সংক্ষেপে শাবিপ্রবি বা SUST নামে পরিচিত। শাবিপ্রবি বাংলাদেশের একটি সায়ত্ত্বশাসিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যার শিক্ষার মাধ্যম হলো ইংরেজি।
শাবিপ্রবি ২৫ আগস্ট ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অত্যন্ত সুনামের সাথে এটি বর্তমানে দেশের সবথেকে সেরা ও বৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায ১০৯২২ জন এবং শিক্ষকের সংখ্যা ৫৫২ জন।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৬ টি অনুষদের অধীনে মোট ২৭ টি বিভাগ রয়েছে। এছাড়া ৫ টি একাডেমিক ভবন, ২ টি প্রশাসনিক ভবন এবং ৫ টি ছাত্রাবাস রয়েছে। এর মধ্যে ৩ টি ছাত্রাবাস ছাত্রদের জন্যে এবং ২ টি ছাত্রাবাস ছাত্রীদের জন্য। এছাড়া এটি দেশের সর্বপ্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থীদ এবং কর্মকর্তাদের জন্য বিনামূল্যে সমগ্র ক্যাম্পাসে ওয়াই ফাই ব্যবহার করার সুযোগ প্রদান করে।
একনজরে শাবিপ্রবি:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৮৬
- ধরন: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
- বর্তমান উপাচার্য: প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: শাবিপ্রবি
- ওয়েবসাইট: https://www.sust.edu/
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)
১০৬ একর জমির ওপর নির্মিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা বিভাগের খুলনা জেলায় উপস্থিত। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯১ সালে।
এরপর থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৬ টি অনুষদের অধীনে মোট ২৮ টি ডিসিপ্লিন এবং ১ টি ইন্সটিটিউট রয়েছে।
এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আবাসিক হলের সংখ্যা ৫ টি। তন্মধ্যে ৩ টি ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য এবং ২ টি মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য।
একনজরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৯১ সাল
- ধরন: সরকারি
- বর্তমান উপাচার্য: ড. মাহমুদ হোসেন
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: খুবি
- ওয়েবসাইট: http://ku.ac.bd/
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের কৃষি বিষয়ক একটি সরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের কৃষি উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব বহনে সক্ষম তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ কৃষিবিদ ও কৃষি প্রোকৌশলী তৈরির লক্ষ্যে ১৮ আগস্ট ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।
বাংলাদেশের কৃষিশিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গনের মোট আয়তন ১২০০ একর।
বর্তমানে অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮,০৮৮ জন এবং শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন প্রায় ৫৬৭ জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ টি অনুষদের অধীনে মোট ৪১ টি বিভাগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ৯ টি ছাত্র হল এবং ৪ টি ছাত্রী হল।
সূচনালগ্ন থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শস্যের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর বিশ্বসেরা গবেষকদের নামের তালিকায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষক জায়গা করে নিচ্ছেন।
একনজরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:
- প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৬১
- ধরন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
- বর্তমান উপাচার্য: প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান
- অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
- সংক্ষিপ্ত নাম: বাকৃবি
- ওয়েবসাইট: https://www.bau.edu.bd/
শেষ কথা
এই দশটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আরো অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেগুলো দেশ-বিদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। তবে দুঃখজনকভাবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান ও শিক্ষার পরিবেশ প্রতিনিয়ত ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ আসনের অভাবে প্রতিবছর সমগ্র দেশের অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি যুদ্ধে হেরে যায় এবং দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন আগের মতো আর দেশ বরেণ্য গবেষক, বিজ্ঞানী বা বুদ্ধিজীবী বেড়িয়ে আসেন না।
কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও নানান অব্যবস্থাপনার কারনের এসব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভীত দিনকেদিন দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের উচিত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে সঠিক নজর দেওয়া এবং দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।