রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর ১০ টি উপায়

চারদিকে প্রচুর কম্পিটিশন সবাই ছুটছে তাঁদের গন্তব্যর দিকে। শিক্ষার্থী ছুটছে স্কুল কলেজে, চাকুরীজিবী ছুটছে চাকরীতে, ড্রাইভার ছুটছে তার গাড়ি নিয়ে। কোথাও যেন থামার একটু সময় নেই। সবার এই ছুটে চলার একটাই উদ্দেশ্য ক্যারিয়ার গড়া, নিজেকে প্রতিষ্ঠত করা। 

ক্লান্তিহীন এই ছুটে চলার জন্য আমাদের দরকার শক্তি, কম্পিটিশন ঠেলে সামনে এগিয়ে যাবার জন্য দরকার প্রচুর এনার্জি। সারাদিন বিরতিহীন ছুটে চলার পর আমরা বিশ্রাম করার জন্য আর পরের দিনের ছুটে চলার শক্তি সঞ্চয়ের জন্য রাতে ঘুমাতে যাই। কিন্তু এখানেও শাক্তি নেই, রাতে কোনমতেই যেন ঘুম চোখের পাতায় ঘুম আসে না। আবার ঘুম যখন আসে তখন আমাদের হাতে ঘুমের পর্যাপ্ত সময় থাকে না। কেননা আবার সময় হয়ে যায় লাইফের সেই কম্পিটিশনে ছুটে চলার। 

সুন্দর, সুস্থ জীবন যাপনের জন্য ঘুমের কোন বিকল্প নেই। একই সাথে আমাদের সারাদিনের কাজ কর্মে প্রোডাক্টিভিটির জন্য রাতে প্রশান্তির ঘুম খুবই প্রয়োজন। আর প্রশান্তির ঘুম তখনই হবে যখন আপনি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারবেন। 

রাতে ঘুমানের কয়েকটা স্তর থাকে, সবগুলো স্তরের রয়েছে আলাদা আলাদা কাজ। ঘুমের এই স্তরগুলোর মধ্যে সবথেকে উচুস্তর হচ্ছে সূর্য ডোবার পর থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত। অর্থাৎ এই সময়ের ঘুম অনান্য সময়ের ঘুমের থেকে কয়েকগুণ কার্যকারী। কিন্তু আমরা করি এর উল্টোটা, মধ্যেরাত অথবা শেষ রাতের পর ঘুমাতে যাই এবং ঘুম থেকে উঠি অর্ধেক বেলার পরে। 

ঘুমের যে বদঅভ্যাস আমরা গড়ে তুলেছি এই ঘুম আমাদের শরীরের ভালোর থেকে খারাপ দিকই বেশি বয়ে আনে যা আমরা পরবর্তী জীবনে ফল ভোগ করে থাকি। তাই সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের জন্য এবং আমাদের সারাদিনের কাজ-কর্মে প্রোডাক্টটিভ থাকার জন্য আমাদের সবারই উচিত রাতে যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া।

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর ১০ টি উপায়

একই সময়ে ঘুমাতে যান

রুটিন করে প্রতিদিন একই সময় বিছানায় ঘুমাতে যেতে হবে। আজকে রাত ১০ টা তো কালকে ১২ টা এমন যেন না হয়। একই সময় ঘুমানোর অভ্যাসের ফলে যখন প্রতিদিন ওই সময়টা আসে তখন ব্রেইন সিগনাল দিতে থাকে এখন ঘুমের সময়।

শারীরিক পরিশ্রম করুন

সারাদিনে যতবেশি পারা যায় শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে, ঘাম ঝড়াতে হবে যেন দিন শেষে বিছানায় ঘুমাতে গেলে ক্লান্তি অনুভব হয়। যদি এমন হয় যে আপনার অফিসের সারাদিন ডেস্কে বসে বসে কাজ করতে হয় তাহলে প্রয়োজনে হেটে অফিসে যান এবং ফিরুন। অর্থাৎ যাই করুন না কেন সারাদিনে পরিশ্রম করার মতো কিছু না কিছু কাজ করুন।

ক্যাফেইন যুক্ত খাবার পরিহার করুন

চা, কফি, কোক, বিভিন্ন ভাড়াপোড়া যেগুলোতে ক্যাফেইন যুক্ত থাকে সেইসব খাবার ঘুমের অনন্ত ৬ ঘণ্টা আগে পরিহার করুন।

তামাক এলকোহল পরিহার করুন

বিড়ি, সিগারে, মদ এইসব আমাদের শরীরের জন্য কখনেই ভালো না, আর ঘুমের জন্য তো আরো না। তাই রাতে ভালো ঘুমের জন্য তামাক এলকোহল পরিত্যাগ করুন, যদি বাদ দিতে নাও পাড়েন ঘুমের ৩-৪ ঘণ্টা আগে এইসব পান করা থেকে বিরত থাকুন।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ করুন

ইলেকট্রনিক ডিভাইসে এক প্রকার আলো থাকে যা আপনার চোখে ঘুমের বাধা সৃষ্টি করে। তাই ঘুমের ২-৩ ঘণ্টা আগে থেকে যত ধরণের ইলেকট্রনিক ডিভাইস আছে মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার ইত্যদি সব কিছু থেকে দূরে থাকুন।

রাতের খাবার সময় মতো শেষ করুন

আমরা অধিকাংশই রাতের খাবার শেষ করার পর পরই ঘুমাতে চলে যাই, কিন্তু এটা ভালো প্যাক্টিস না। ঘুমানোর ২-৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করা উচিত।

গরম দুধ পান করুন

রাতে ঘুমাতে যাবার আগে কিছু পুষ্টিকর খাবার আছে যেগুলো খাওয়া উচিত যেমন: ১ গ্লাস গরম দুধ পান করা যেতে পারে।

ব্যায়াম করুন

ঘুমানোর আগে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করা উত্তর, এতে করে শারীরিক পরিশ্রম হয় শরীরের ঘাম ঝরে যার ফলে শরীরে ক্লান্তি অনুভব হয় এবং ঘুম আসতে সাহায্য করে।

বই পড়ার অভ্যাস করুন

ঘুমানোর আগে কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে তা অনেক উপাকারী হবে, যেমন রুটিন মোতাবেন ঘুমানোর আগে প্রতিদিন বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

ঘুমানোর ভালো পরিবেশ তৈরি করুন

চেষ্টা করতে হবে বেড রুম যেন ঘুমানোর জন্য অনান্য রুম থেকে একটু আলাদা করার। ঘুমানোর পরিবেশ তৈরি করার জন্য রুম পর্যাপ্ত অন্ধকার থাকতে হবে এবং রুমের পরিবেশ শীতল হতে হবে। 

Leave a Comment