আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ঘুম আমাদের জন্য বড় একটি নেয়ামত। ঘুম মানুষকে প্রশান্তি দান করে এবং পরের দিনের জন্য মানুষের শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে। আল্লাহ রাত কে সৃষ্টি করেছে প্রশান্তির জন্য আর দিনকে সৃষ্টি করেছে কর্মের জন্য। কিন্তু আমরা এখন তার বিপরিতে হাটছি, রাতভর জেগে থাকছি আর সারাদিন ঘুমাচ্ছি।
রাত জাগার খারাপ প্রভাব সম্পর্কে যখন বুঝতে পারছি বা যখন এর ফল ভোগ করতে শুরু করছি তখন চাইলেও আর রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারছি না। আবার কেউ কেউ জীবনের নানা সমস্যায় পড়ে চিন্তা-ভাবনা, হতাশায় আক্রান্ত হয়ে ঘুম যেন হারিয়ে বসেছেন।
শত চেষ্টা করেও সেই আগের মতো রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি না। অথচ মাত্র কয়েক বছর আগেই আমাদের শৈশব, কৈশরের জীবনটা কতই না সুন্দর ছিলো। না ছিলো জীবন নিয়ে কোন ভাবনা, না ছিলো ক্যারিয়ার নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা বিছানাই শুলেই যেন রাজ্যর ঘুম চোখে ভাড় করে বসতো। সত্যি আমরা সবাই ই সেই জীবনে কতই না সুখি ছিলাম।
আগের সেই সময়গুলো তো আমরা ফিরে পাবো না, কিন্তু এখন বর্তমান সময়কে আমরা চাইলেই আল্লাহর প্রদাত্ত জীবন বিধান অনুসারণ করে সুন্দর করে তুলতে পারি। জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে ঘুমের গুরুত্ব অপরসীম। ঘুম আমাদের শরীরে ঔষধের মতো কাজ করে, এটা এমন এক ঔষধ যা প্রতিনিয়ত আমাদের শক্তি জোগায়।
কিন্তু এই ঔষধ যেন এখন সবার ধরাছোয়ার বাইরে। এমনকি টাকা দিয়ে ঘুমের ঔষধ কিনেও আমরা ঘুমাতে পারছি না। তবে হতাশ হবেন না, নিয়মিত তাড়াতাড়ি ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুললে এবং রাসুল (সাঃ) শিখিয়ে দেয়া ঘুমের দোয়া পাঠ করলে ইনশাআল্লাহ আপনিও পাবেন প্রশান্তির ঘুম।
ঘুমের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন তুমি বিছানায় আশ্রয় গ্রহণ করো (ঘুমাতে যাও) তখন বলো-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতিস সাবয়ি ওয়া মা আজাল্লাত ওয়া রাব্বাল আরদিনা ওয়া মা আকাল্লাত ওয়া রাব্বাশ শায়াত্বিনি ওয়া মা আদাল্লাত কুন লি ঝারাম মিন শাররি খালক্বিকা কুল্লিহিম ঝামিআ। আইঁইয়াফরুত্বা আলাইয়্যা আহাদুম মিনহুম আও আইঁইয়াবগিয়া আলাইয়্যা আয্যা ও ঝাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা ও লা ইলাহা ইল্লা আংতা।’ (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : “হে আল্লাহ! সাত আকাশের প্রভু এবং যার ওপর তা ছায়া বিস্তার করেছে, সাত জমিনের প্রভু এবং যা কিছু তা উত্থাপন করেছেন, আর শয়তানদের প্রতিপালক এবং এরা যাদেরকে বিপথগামী করেছে! তুমি আমাকে তোমার সব সৃষ্টিকুলের অনিষ্টতা থেকে রক্ষার জন্য আমার প্রতিবেশী হয়ে যাও, যাতে সেগুলোর কোনোটি আমার ওপর বাড়াবাড়ি করতে না পারে অথবা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে না পারে। সম্মানিত তোমার প্রতিবেশী, সুমহান তোমার প্রশংসা। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তুমি ব্যতিত আর কোনো মাবুদ নেই।’